আওয়ামী লীগ সরকারকে সহায়তা ভারতপন্থী “অপপ্রচার” চক্রের

বাংলাদেশের বিতর্কিত নির্বাচনকে “অবাধ ও সুষ্ঠু” বলে আখ্যায়িত করেছিল শ্রীবাস্তব নেটওয়ার্কের অংশ সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরাম।

আওয়ামী লীগ সরকারকে সহায়তা ভারতপন্থী “অপপ্রচার” চক্রের
২০১৮ সালের নভেম্বরে এসএডিএফয়ের আয়োজনে শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য , ছবিতে শেখ হাসিনার পাশে এমইপি রুপার্ট ম্যাথুকে দেখা যাচ্ছে। ফটো: পিআইডি

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল ব্রাসেলস-ভিত্তিক একটি থিংকট্যাংক। বিরোধী দলগুলো যেন “বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক রায়কে শ্রদ্ধা” জানায়, সেই আহ্বানও করেছিল ওই সংগঠনটি। সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরাম নামে এই সংগঠনকেই সম্প্রতি সংঘবদ্ধ ভারতীয় অপপ্রচারযন্ত্রের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ব্রাসেলস-ভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ইইউ ডিসইনফো ল্যাব সম্প্রতি তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে জানিয়েছে, সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরাম বা এসএডিএফ নামে সংগঠনটি ভুয়া সংবাদ মাধ্যম ও সংস্থার সম্মিলনে গঠিত একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অংশ। এই চক্র বা নেটওয়ার্কের নেপথ্যে রয়েছে শ্রীবাস্তব গ্রুপ নামে একটি ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শ্রীবাস্তব গ্রুপ বিদেশে ভারত সরকারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় অনানুষ্ঠানিকভাবে দেখভাল করে।

ইইউ ডিসইনফো ল্যাবের গবেষণার ফলাফল “ইন্ডিয়ান ক্রনিকলস: ডিপ ডাইভ ইনটু অ্যা ফিফটিন-ইয়ার অপারেশন টার্গেটিং দ্য ইইউ অ্যান্ড ইউএন টু সার্ভ ইন্ডিয়ান ইন্টারেস্টস” শীর্ষক বিস্তারিত প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিবিসি, পলিটিকো, আল জাজিরা, ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিন সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ইইউ ডিসইনফো ল্যাবের মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘ-অনুমোদিত একাধিক এনজিওর একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে, যারা ভারতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় প্রচার করে ও পাকিস্তানকে সমালোচনা করে। এরকম এনজিওগুলোর অন্তত ১০টি সরাসরি শ্রীবাস্তব পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, “জাতিসংঘ-অনুমোদিত এই এনজিওগুলো ব্রাসেলস ও জেনেভাতে অনুনোমোদিত বিভিন্ন থিংকট্যাংক ও সংখ্যালঘু অধিকার বিষয়ক এনজিওর সঙ্গে কাজ করে। এদের মধ্যে কয়েকটি হলো ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর পাকিস্তানি মাইনরিটিজ, বেলুচিস্তান হাউজ ও সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরাম (এসএডিএফ)। এই সবগুলোই ধোঁয়াশাপূর্ণ। আর এগুলো প্রতিষ্ঠা করেছে শ্রীবাস্তব গ্রুপ।”

এসএডিএফ সম্পর্কে প্রতিবেদনে নির্দিষ্ট করে বলা হয়, “আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে, এসএডিএফের নিজস্ব ওয়েবসাইটের ডোমেইন নিবন্ধিত রয়েছে শ্রীবাস্তব গ্রুপের নামে। পাশাপাশি, ব্রাসেলসে এসএডিএফের প্রথম কার্যালয়টির ঠিকানা ছিল ৩৭ স্কোয়ার মিউজ। এটি মূলত শ্রীবাস্তব গ্রুপেরই ঠিকানা।”

পাওলো কাসাকা নামে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সাবেক একজন সদস্য ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসএডিএফ প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে শ্রীবাস্তব গ্রুপের প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য সংগঠনেরও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, “এসএডিএফ প্রতিষ্ঠার মাস খানেক পর, পাওলো কাসাকা জেনেভায় জাতিসংঘের দপ্তরে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে আমন্ত্রিত হন। ওই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছিল কমিশন টু স্টাডি দ্য অর্গানাইজেশন অব পিস [এই বিলুপ্ত প্রতিষ্ঠানটি নতুন করে প্রতিষ্ঠা করেছিল শ্রীবাস্তব গ্রুপ]। এছাড়া ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেনেভায় জাতিসংঘের কনফারেন্স সেন্টারে এসএডিএফ প্রথমবারের মতো কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানের সহ-পৃষ্ঠপোষক ছিল এই কমিশন টু স্টাডি দ্য অর্গানাইজেশন অব পিস। সেই অনুষ্ঠানে বেলুচিস্তান হাউজের [শ্রীবাস্তব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান] প্রেসিডেন্ট মেহরান বেলুচ গুরুত্বপূর্ণ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।”

কমিশন টু স্টাডি দ্য অর্গানাইজেশন অব পিস নামে সংগঠনটি সত্তরের দশকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি এই সংগঠনটির পুনরুত্থান ঘটিয়ে নিজেদের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে শ্রীবাস্তব গ্রুপ।

এসএডিএফ মূলত ভারত সরকারের পক্ষে ও পাকিস্তানের বিপক্ষে বিভিন্ন গবেষণা প্রকাশ করে থাকে। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষেও বিভিন্ন প্রকাশনা ও বক্তব্য জারির ইতিহাস রয়েছে সংগঠনটির। সেসব প্রকাশনায় বাংলাদেশের শাসক দলের প্রশংসার পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোর কড়া সমালোচনাও করা হয়।

২০১৮ সালের নভেম্বরে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ডানপন্থী একাধিক সদস্যকে বাংলাদেশ সফরে নিয়ে আসে এসএডিএফ। ওই সময় ইইউ প্রতিনিধি দল শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের রাজনীতিক ও সরকারপন্থী সাংবাদিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সফর শেষে সংগঠনটি একটি বিবৃতি জারি করে, যেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, উদারপন্থা, স্বাধীনতা, লিঙ্গ সমতা ও গণতন্ত্রের বিচারে ইউরোপের মূল্যবোধই ধারণ করে বাংলাদেশ।”

এক মাস পর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনের এক দিন পর এসএডিএফ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, নির্বাচন ছিল সুষ্ঠ। এতে আরও বলা হয়, “নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত ভালোভাবে নির্বাচনের পরিকল্পনা করেছে। খুবই আনন্দমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।”

এসএডিএফের এই বিবৃতি পরদিন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে তানিয়া ফোস্টার নামে এক ব্যক্তির মন্তব্য ছিল, যাকে “কানাডা থেকে আসা একজন পর্যবেক্ষক” হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। তিনি সেই বিবৃতিতে বলেন, “এসে ভোট দিতে পেরে ভোটাররা অত্যন্ত উৎসাহ বোধ করছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের অক্লান্ত চেষ্টায় নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।”

পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে এই তানিয়া ফোস্টারের পৃষ্ঠপোষক সংগঠন সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের আওয়ামী-ঘেঁষা অবস্থানের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংগঠনটির নামের সঙ্গে “সার্ক” শব্দটি থাকলেও, এই সংগঠনটি দক্ষিণ এশিয় রাষ্ট্রগুলোর সংগঠন সার্কের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়। এতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, তানিয়া ফোস্টারের এই সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান হলেন আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য ও অন্যতম সদস্য হলেন আওয়ামী লীগের জোট সদস্য জাতীয় পার্টির সাবেক একজন সংসদ সদস্য।

পরবর্তীতে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে তানিয়া ফোস্টার স্বীকার করেন যে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কোনো অভিজ্ঞতা তার ছিল না। তিনি বলেন, “আমি জানতাম না যে, আমাদের প্রতিবেদনের এত দাম আছে, কারণ আমরা মাত্র নয়টি ভোটকেন্দ্র সফর করেছি, সবগুলোই ছিল ঢাকার ভেতরে। আমরা আরও প্রতিকূল এলাকায় যাইনি, নির্বাচন কমিশনকে পরীক্ষা করিনি। এছাড়া কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বা এজেন্টদের প্রকৃত পরিচয়ও যাচাই করিনি।” পরবর্তীতে তানিয়া ফোস্টার তার মন্তব্য প্রত্যাহার করেন।

বাংলাদেশের বেশিরভাগ স্বাধীন পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক ওই নির্বাচনে জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, ওই নির্বাচন ছিল “আংশিকভাবে অংশগ্রহণমূলক, অপ্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, প্রশ্নবিদ্ধ ও ত্রুটিপূর্ণ।” সংস্থাটি দৈবচয়নের ভিত্তিতে ৫০টি সংসদীয় আসনে গবেষণা চালায়। এর মধ্যে ৩৩টি আসনেই নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট ভর্তি করার ঘটনা পেয়েছে সংগঠনটি। সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৩০টি আসনে প্রকাশ্যে মানুষের সামনে ব্যালট বক্স ভর্তির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ২২টি আসনে ব্যালট পেপারেরই সংকট পড়ে গিয়েছিল।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত একটি সভায় উপস্থিত ছিলেন এসএডিএফের নির্বাহী পরিচালক। নিজের বক্তব্যে তিনি শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসাও করেন।

শ্রীবাস্তব গ্রুপ প্রথমবারের মতো আলোচনার জন্ম দেয় গত বছর। সংস্থাটি তখন ভারতের বিরোধপূর্ণ কাশ্মিরে ইইউর একদল পার্লামেন্ট সদস্যের সফরের আয়োজন করে। অথচ, ওই সময় কাশ্মীরে বিদেশী দূরে থাক, ভারতীয়দেরও প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।

শ্রীবাস্তব গ্রুপের ওয়েবসাইটে (বর্তমানে বন্ধ) উল্লেখ ছিল যে, গ্রুপটি ভারতের অন্যতম বর্ধনশীল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, এরোস্পেস, পরামর্শক সেবা, স্বাস্থ্য সেবা, মিডিয়া ও প্রকাশনা খাতে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ রয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে ভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যম দ্য ওয়্যার শ্রীবাস্তব গ্রুপের নিবন্ধন সংক্রান্ত নথিপত্র বিশ্লেষণ করে জানায়, প্রতিষ্ঠানটি কোনো ধরণের ব্যবসায়িক লেনদেনের ইতিহাস নেই। এরপর শ্রীবাস্তব গ্রুপের বিপুল অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠে।

শ্রীবাস্তব গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওমেন’স ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল থিংকট্যাংক (ওয়েস্টট) নামে একটি সংগঠনের পরিচালক ম্যাডি শর্মাও এসএডিএফের প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে কাশ্মির ও ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন। ঢাকায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। ম্যাডি শর্মা ব্যক্তিগতভাবেও শ্রীবাস্তব গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে জানিয়েছে ইইউ ডিসইনফো ল্যাব।

এই প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে, এসএডিএফের নির্বাহী পরিচালক পাওলো কাসাকা নেত্র নিউজকে বলেন, “আপনাদের সাথে ‘ডিসইনফো ল্যাব’ নামে এই অপপ্রচার চক্রের সম্পর্ক কী? আপনি কেন এমন মন্তব্য করছেন যা মিথ্যা ও সম্পূর্ণ জিহাদি প্রোপাগান্ডা? আপনারা কেন এই অপপ্রচারযজ্ঞে সহযোগিতা করছেন? আপনাদেরকে ও এই অপপ্রচারে অর্থায়ন করছে কে?”

পৃথক আরেকটি ইমেইলে কাসাকা বলেন, “আপনারা বাংলাদেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন মনগড়া কর্মকান্ড ও বক্তব্যের সঙ্গে আমার নাম জুড়ে দিচ্ছেন। এরপর আপনি এর সঙ্গে আমাদের ওয়েবসাইট কে বানিয়েছে আর কোন ভবনে এসএডিএফের অফিস ছিল কয়েক মাস (অন্য কয়েক ডজন সংগঠনের সাথে মিলে) তার একটি যোগসূত্র বের করে আপত্তিকর অনুমান প্রকাশ করছেন।”●

ডেভিড বার্গম্যান, ব্রিটেন-ভিত্তিক সাংবাদিক — নেত্র নিউজের ইংরেজি বিভাগের সম্পাদক।


EU Disinfo Lab, “Indian Chronicles: Deep dive into a 15 year operation targeting the EU and UN to serve Indian interests” (December, 2020)

thewire.in, Mysterious Entity Behind MEPs Kashmir Visit, Srivastava Group Has Little Public Presence

Reuters, Some in Bangladesh election observer group said they regretted involvement (Jan, 2019)

SADF, “Future generations should not suffer as our’s did’: PM Sheikh Hasina dreams of a prosperous Bangladesh (Nov, 2018)

SADF, Report into delegation visit to Bangladesh, November 2018

Bangladesh MOFA, Statement of the South Asia Democratic Forum (SADF) on 11th Bangladesh Parliamentary Election. (Jan, 2019)

SADF, Draft Agenda of meetings in Bangladesh (Nov, 2018)