সেনাবাহিনী কেন জোর করে চুল কেটে দেয়?
সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় একদল সেনা সদস্য জোর করে কয়েকজন ছেলের চুল কেটে দিচ্ছেন। সামরিক সরকার বা সেনা-সমর্থিত শাসনের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে যুবকদের ধরে ধরে চুল কেটে দেয়ার প্রবণতা বাংলাদেশে অতীতেও দেখা গেছে।
প্রশ্ন হলো, সেনাবাহিনী কেন চুল কাটতে যায়? কিংবা সেনাবাহিনী কেন মানুষের স্বাভাবিক বা স্বতঃস্ফূর্ত আচরণকে ডিসিপ্লিন বা শায়েস্তা করতে যায়?
বেসামরিক ও সামরিক লোকজনের সাংস্কৃতিক পার্থক্যের মধ্যে এই প্রশ্নের আংশিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে। তবে পুরোটা পাওয়া যাবে না।
প্রথমে এই আংশিক ব্যাখ্যায় আসা যাক।
বেসামরিক নাগরিক সমাজ ও সুশৃঙ্খল একটি সামরিক বাহিনীর মধ্যে আচার-আচরণ, মূল্যবোধ ও বিশ্বাসে তফাৎ রয়েছে। একেই বলা হয় বেসামরিক ও সামরিক সংস্কৃতির পার্থক্য। বাংলাদেশে সামরিক বাহিনী ও জনসাধারণের মধ্যকার এই ফারাক নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা নেই। তবে বিশ্বের অন্যত্র এই বিষয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে।
১৯৫৭ সালে স্যামুয়েল হান্টিংটন ‘দ্য সোলজার্স অ্যান্ড দ্য স্টেট’ বইয়ে এই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। এই সংস্কৃতিগত পার্থক্য নিয়ে যত তর্কবিতর্ক হয়েছে, তার বিবর্তন নিয়ে ১৯৯৯ সালে লিন্ডসে কোহেন কাজ করেছেন। তাদের গবেষণা থেকে সামরিক বাহিনীর সদস্যবৃন্দ ও বেসামরিক জনগণের মধ্যকার সংস্কৃতিগত পার্থক্য নিয়ে দুইটি সাধারণ অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়।
প্রথম অনুসিদ্ধান্ত হলো: সেনা সদস্যরা নিজেদেরকে বেসামরিক নাগরিকদের তুলনায় সুপিরিয়র বা উচ্চতর মনে করেন। তারা বিশ্বাস করেন, সামরিক জীবন বেসামরিক জগতের তুলনায় অনেক বেশি সৎ, স্বচ্ছ, নিয়মানুবর্তী ও নৈতিকতাপূর্ণ। দুই নম্বর অনুসিদ্ধান্ত হলো: সামরিক বাহিনীর সদস্যরা মনে করেন সামরিক মূল্যবোধ একটি আদর্শ সমাজ গড়ার জন্যও অনুকরণীয়।
কিন্তু সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে এই শ্রেষ্ঠত্ববোধের উৎস কী?
সামরিক শ্রেষ্ঠত্ববোধের উৎস
সামরিক শ্রেষ্ঠত্ববোধের উৎস হিসেবে আমরা কয়েকটি উপদানকে চিহ্নিত করতে পারি। তবে নিঃসন্দেহে, এই বোধের প্রধান কারণ হলো একটি পেশাদার সুশৃঙ্খল সংগঠন হিসেবে সামরিক বাহিনীর অস্তিত্ব।
সামরিক বাহিনীর মূল্যবোধ, আদর্শ ও নিয়মনীতি বাহিনীর সদস্যদের এমনভাবে প্রভাবিত করে যে তাদের আত্মপরিচয়ের ভিত্তিই বাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে।
সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যেই দূরত্ব ও স্বাত্যন্ত্র — তা বাহিনীর সদস্যদের ওই আত্মপরিচয়-বোধকে আরও পোক্ত করে।
সামরিক শ্রেষ্টত্ববাদী পরিচিতি বিনির্মাণে আরেকটি গুরুত্বপূর্ন নিয়ামক হলো রাষ্ট্র ও সমাজে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিশেষ মর্যাদা। যেকোনো রাষ্ট্রেই সেনা সদস্যরা বিশেষ কিছু আর্থ-সামাজিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন। বাংলাদেশেও সামরিক বাহিনী এই বিশেষ সুবিধা পায়, যা দেশের অন্য কোনো পেশাদার সংগঠন বা সংস্থার সদস্যরা পান না।
এই অবস্থা কমবেশি সব দেশেই আছে। তবে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর আচরণ বিশ্লেষণ করতে হলে আরেকটি বিষয়কেও গুরুত্ব দিতে হবে। সেটি হলো, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সেনাবাহিনীর আরও বিশেষ অবস্থান থাকে, যা উন্নত দেশে থাকে না। কেননা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয় দেরিতে। সচরাচর এসব দেশে অন্যান্য সকল সরকারি বা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সবচেয়ে শক্তিশালী ও আধুনিক প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকে সেনাবাহিনী।
উন্নয়নশীল দেশে গণতান্ত্রিক বেসামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোও থাকে দুর্বল। কাজেই এসব দেশের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী সব সময়ই বড় ভূমিকা পালন করে। বেসামরিক অভিজাতরা দুর্নীতিবাজ ও বিদেশ-নির্ভর হিসেবে তকমা পাওয়ায়, অনেক সময় সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপেই বারবার ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। আর এই পালাবদলের সময় সেনাবাহিনী নিজেদের উপস্থাপন করেছে দেশের আধুনিকায়ন ও জাতীয় উন্নয়নের ধারক-বাহক হিসেবে। এক্ষেত্রে মিশর, তিউনিসিয়া, লিবিয়া ও পাকিস্তানের উদাহরণ দেয়া যেতে পারে।
অন্যান্য উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশেও সেনাবাহিনীর এই বিশেষ অবস্থান বেসামরিক জনগণের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সাংস্কৃতিক ফারাক বা দূরত্বকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
একটি কার্যকর গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ শর্তই হলো সামরিক কর্তৃপক্ষের উপর বেসামরিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হওয়া। তাই সামরিক ও বেসামরিক সংস্কৃতির মধ্যে ফারাক বাড়তে থাকার প্রবণতা একটি গণতন্ত্রের কার্যকর হয়ে উঠার পথে বিপজ্জনক।
“টোটাল” প্রতিষ্ঠানের ধারণা
সামরিক বাহিনীর কাঠামো কী রকম তা বুঝতে আরভিং গফম্যানের কাজ অত্যন্ত তাৎপর্যপূরণ।
কানাডিয়ান-আমেরিকান এই সমাজতত্ববিদ সামরিক বাহিনীকে একটি “টোটাল ইন্সটিটিউশন” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কারাগার, মানসিক চিকিৎসালয়, ইত্যাদিও তার ভাষায় “টোটাল ইন্সটিটিউশন”।
এই ধরণের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যারা থাকেন, তারা বৃহত্তর সমাজ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি সীমাবদ্ধ পরিসরে কঠোর নিয়মানুবর্তিতার অধীনে বসবাস করেন। একটি “টোটাল ইন্সটিটিউশন” বিভিন্ন আচার ও দৈনন্দিন চর্চার মাধ্যমে অধীনস্থ ব্যক্তিদের জীবনের সকল দিককে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এই প্রতিষ্ঠান যেসব সদস্যকে রিক্রুট করে, তাদের ব্যক্তি জীবনের প্রাক্তন পরিচয় মুছে দিয়ে (de-personalize) প্রতিষ্ঠান-স্বীকৃত একটি নতুন সামষ্টিক (collective) পরিচয় বিনির্মাণ করতে চায়। এই শৃঙ্খলা আরোপের অংশ হিসেবেই সেনাবাহিনীর সদস্যদের চুলের বিশেষ ধরণ বা স্টাইল থাকে।
সারাবিশ্বেই প্রশিক্ষণের শুরুতে সৈন্যদের চুল কেটে ফেলতে হয়। এই চুল কাটা এক ধরণের আচার। এই আচার চর্চার মাধ্যমে নতুন নিয়োগকৃত একজন সৈন্য ব্যক্তি হিসেবে তার স্বাতন্ত্র্য পরিত্যাগ করেন এবং একটি সামষ্টিক পরিচিতি গ্রহণ করেন।
প্রতিষ্ঠানের ভেতর সকল সদস্যের সমরূপতা, আনুগত্য ও নিয়মনিষ্ঠা নিশ্চিত করার জন্যই পেশাদার সামরিক বাহিনী এই চুল কাটা সহ বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক আচার-আচরণ ও প্রথা তৈরি করে রেখেছে।
চুল কাটার কর্তৃত্ববাদী ইতিহাস ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণের ধারণা
উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বোর্ডিং স্কুলগুলোতে জোর করে আদিবাসী শিশুদের চুল কেটে ফেলা হতো। এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য ছিল ন্যাটিভ আমেরিকান বা আদিবাসীদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মুছে দিয়ে শ্বেতাঙ্গ সমাজে তাদেরকে আত্মীকরণ করা।
দক্ষিণ কোরিয়াতে সামরিক শাসন চলার সময় ছেলেদের লম্বা চুল কেটে ফেলা হতো। ফিলিপাইনে স্বৈরশাসক ফার্ডিনান্ড মার্কোসের শাসনামলের শুরুর দিকে তিনি পুরুষদের কাঁধ সমান চুল কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর ফ্রান্সে জার্মান সৈনিকদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর অপরাধে ফরাসি নারীদের সাজা বা অপদস্ত করতে জোরপূর্বক তাদের চুল কেটে ফেলা হতো।
চুল নিয়ে সেনাবাহিনী বা যেকোনো কর্তৃত্বপরায়ণ প্রতিষ্ঠান বা ব্যবস্থার এতো আগ্রহ কেন? কেনই বা কোনো অপরাধের শাস্তি হয় চুল কাটা? কানাডিয়ান নৃতাত্বিক সি আর হলপাইক (১৯৬৯) সহ সমাজতত্ববিদরা বিভিন্নভাবে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
চুল একজন মানুষের নিছক কোনো জৈবিক উপাদান নয়। চুল শুধু একজন মানুষের নিজস্ব স্বত্বার প্রতীকই নয়; বরং চুল নিজেই একটি স্বত্বা। দেহের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঙ্গে চুলের মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে একজন মানুষ যত মাধ্যমে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পারেন, তার মধ্যে চুল সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যমগুলোর একটি। কর্পোরেট নির্বাহী, সেনা সদস্য, শিখ, নারীবাদী, হিপ্পি, চলচ্চিত্র তারকা কিংবা পপ তারকা — সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠী ও উপ-সংস্কৃতির সদস্যগণ চুলের ধরণ, আকার, রং, ইত্যাদি বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে নিজেদের প্রকাশ করতে চান।
চুল যেমন হতে পারে সংখ্যালঘু বা নিপীড়িত মানুষজনের গোষ্ঠিগত পরিচয় (গ্রুপ আইডেন্টিটি) প্রকাশের মাধ্যম, তেমনি তা হতে পারে সমাজ-সংস্কৃতির শক্তিশালী পূর্বানুমানগুলোকে (stereotype) চ্যালেঞ্জ করারও একটি মাধ্যম। শুধু গথ বা পাংকের মতো উপ-সংস্কৃতিতেই নয়; ষাটের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলন চলার সময় কৃষ্ণাঙ্গ অনেক অ্যাক্টিভিস্ট নিজেদের চুলের স্টাইলকে ‘ব্ল্যাক প্রাইড’ ও কৃষ্ণাঙ্গ জনতার ঐক্যের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করতেন। ঠিক একই কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আদিবাসী মানুষজনের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বিনুনি করা চুল রাখার প্রবণতা বেড়েছে।
ষাটের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে হিপ্পি বা কাউন্টার-কালচার আন্দোলনের প্রতীকই ছিল লম্বা এলোমেলো চুল। তাদের কাছে চুলের ওই স্টাইল ছিল দেশটিতে বিদ্যমান প্রটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টান সংস্কৃতিতে প্রচলিত কর্মনিষ্ঠা, ভোগবাদ, পুঁজিবাদ ও যৌনতা নিয়ে রক্ষণশীল নৈতিকতা আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক।
১৯৬৯ সালে এই কাউন্টার কালচার আন্দোলন যখন একেবারে জনপ্রিয়তার শিখরে অবস্থান করছিল, ঠিক তখন সিআর হলপাইক তার ‘সোশ্যাল হেয়ার’ প্রবন্ধে দেখিয়েছিলেন যে, আমেরিকান সমাজে নারীরা ছাড়াও পুরুষদের অন্তত দুইটি গোষ্ঠী লম্বা চুল রাখে: এক. বুদ্ধিজীবীরা আর দুই. সমাজ পরিবর্তনে আগ্রহী বা নিজেদের মূলধারার বাইরে ভাবা মানুষজন, যাদেরকে লেখক ‘রিবেল’ বা বিদ্রোহী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
কাজেই লম্বা চুল হলো একটি সমাজে subversiveness বা অরাজকতা সৃষ্টির সামর্থ্য রাখে এমন উপাদানগুলোর প্রতীক।
নিপীড়িত মানুষজনের সামষ্টিক পরিচয়ের প্রকাশ আর কর্তৃত্ববাদী মতাদর্শ ও ব্যবস্থার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারা — চুলের এই দুই ‘subversive’ সামর্থ্যকে যেকোনো শাসকগোষ্ঠীই ভয় পায়। এই কারণেই সামাজিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, বহাল ও পুনঃস্থাপনের কৌশল হিসেবে এবং সমাজের সর্বস্তরে অবৈচিত্র্যতা আরোপের উদ্দেশ্যে পৃথিবীর বহু দেশে জোরপূর্বক চুল কাটা হয়েছে, এখনও হচ্ছে।
প্রখর শৃঙ্খলা ও নজরদারির মাধ্যমে যেই সামাজিক দেহ তৈরি হয়, তাকে মিশেল ফুকো নাম দিয়েছিলেন “অনুগামী দেহ” (docile body)। এই অনুগামী দেহ তৈরির উপকরণ হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্রে ও জনপরিসরে সিসিটিভি ক্যামেরা ও অন্যান্য নজরদারির যন্ত্র স্থাপনের উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। এই ধরণের নজরদারি ব্যবস্থা এমন এক পরিবেশ তৈরি করে যা একজন ব্যক্তিকে সর্বদাই মনে করিয়ে দিতে থাকে যে, তাদের প্রত্যেক আচরণ ও গতিবিধির উপর কেউ না কেউ নজর রাখছে। এভাবে ব্যক্তি নিজেই নিজেকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসে, যাতে করে তার আচরণ ও ধ্যানধারণা বিদ্যমান সামাজিক প্রথার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়ে উঠে।
জোরপূর্বক চুল কাটার চর্চাও একজন ব্যক্তির দেহের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা। সমাজে অনুগামী দেহ তৈরির প্রচেষ্টা। চুল কাটার মাধ্যমে বার্তা দেয়া হয় যেন অন্যান্য প্রথা ও ভাবাদর্শকে মানুষ কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই গ্রহণ করে নেয়। এভাবে ব্যক্তির নিজস্ব স্বত্ত্বাকে সীমিত করে তার আচরণকে আরও বেশি অনুমানযোগ্য করে তোলা হয়।
***
শেষ করবো দুইটি ব্যক্তিগত মন্তব্য দিয়ে।
প্রথমত, সামরিক সংস্কৃতি রাষ্ট্রের একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক সংস্কৃতি মাত্র। অন্যান্য যেকোনো সংগঠনের মতোই সামরিক সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োজন ও ইতিহাসের ফলাফল হিসেবে বিকশিত হয়েছে। সামরিক সংস্কৃতির এমন কোনো সার্বজনীনতা নেই যার বদৌলতে বেসামরিক নাগরিকদের উপর এই প্রথা চাপিয়ে দেয়া যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত, সামরিক সংস্কৃতি ও শাসন সর্বদাই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। একেবারে বিশুদ্ধ গণতন্ত্রে সামরিক বাহিনী তো বটেই, আমলাতান্ত্রিক, কর্তৃত্ববাদী বা পুঁজিবাদী কোনো “টোটাল” প্রতিষ্ঠানেরই স্থান থাকার কথা নয়।●
(আব্দুল্লাহ হেল বুবুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষার্থী ও যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ম্যাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডন লাভ্যোয়া ফেলো।)